তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে লাইসেন্সিং ও নির্দেশিকা বিষয়ক এইড ফাউন্ডেশন এর পরিচালিত কমপ্লাইন্স মনিটরিং সার্ভের ফলাফল প্রকাশ

১৩ জুলাই ২০১৯ খ্রিঃ শনিবার, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে প্রথম এইড ফাউন্ডেশন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিয়ন্ত্রণে লাইসেন্সিং বিষয়ক কার্যক্রম শুরু করে। প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আওতাধীন পৌরসভাকে কারিগরি সহযোগীতা প্রদানের মাধ্যমে এই কার্যক্রম চালু করা হয়, পরবর্তিতে সময়ের সাথে সাথে এর আওতা সম্প্রসারিত হয়। সম্প্রতি তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে লাইসেন্সিং ও নির্দেশিকা বিষয়ক, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের ২২টি জেলায় এবং ৬ টি পৌরসভায় এইড ফাউন্ডেশন এর পরিচালিত একটি কমপ্লাইন্স মনিটরিং জরিপ করা হয়। এইড ফাউন্ডেশন এর ঢাকা অফিসে ১৩ জুলাই ২০১৯ খ্রিঃ শনিবার, তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে লাইসেন্সিং ও নির্দেশিকা বিষয়ক এইড ফাউন্ডেশন এর পরিচালিত কমপ্লাইন্স মনিটরিং জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

জরিপকৃত পৌরসভা গুলোর মধ্যে প্রায় ১০০% স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান গুলো লাইসেন্স এর নির্দেশিকা সম্পর্কে অবগত হলেও প্রায় ৭০% পৌরসভায় নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছে, প্রায় ৩০% পৌরসভা গুলোর নির্দেশিকা নেই। অন্যদিকে প্রায় ৫.৬% পৌরসভায় লাইসেন্স এর সাথে নির্দেশিকা প্রদান করে। প্রায় ৭০% পৌরসভা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে লাইসেন্স প্রদানের পূর্বে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের হোল্ডিং নম্বর যাচাই করে লাইসেন্সং প্রদান করে এবং প্রায় ২০% পৌরসভা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে পয়েন্ট অফ সেলের দূরত্ব বিবেচনা করে। প্রায় ৪৭.৪% পৌরসভা স্কুলের ১০০ মিটারের মধ্যে লাইসেন্স প্রদান করে না এবং ৫২.৬% পৌরসভা তাদের এলাকার ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, খাবারের দোকান ও রেস্তরায় তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে লাইসেন্স প্রদান করছে। প্রায় ৩০% পৌরসভা লাইসেন্স ব্যতিত তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

বিক্রেতাদের প্রশ্ন উত্তরের ফলাফল ঃ
প্রায় ৮৯.১% তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতাদের লাইসেন্স রয়েছে এবং প্রায় ৮৪.৮% তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতারা প্রতি বছর লাইসেন্স নবায়ণ করে, সেক্ষেত্রে দেখা যায় পৌরসভা গুলো থেকে এক বছরের বেশী সময় আগে লাইসেন্স গ্রহণ করে প্রায় ৬.৫%, সাত মাস থেকে এক বছরের মধ্যে লাইসেন্স গ্রহণ করে প্রায় ৪০.২%, এবং গত ছয় মাসের মধ্যে লাইসেন্স গ্রহণ করেছে প্রায় ৫৩.৩%। প্রায় ৭০% লাইসেন্স গ্রহীতারা তাদের দোকানে লাইসেন্স এর একটা কপি ঝুলিয়ে রাখেন। অন্যদিকে প্রায় ৬৬.৩% তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতাদের দোকানে লাইসেন্স নির্দেশিকা রয়েছে, এর মধ্যে প্রায় ৯৭% তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতারা নির্দেশিকা মেনে চলে বলে দাবি করেন, তবে প্রায় ৩০.৪% দোকানে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপণ দেখা যায়। প্রায় ৫০.২% দোকান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ মিটারের মধ্যে দেখা যায়। প্রায় ৪৬.৭% দোকানিরা অন্যান্য খাবারের সাথে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করছে।

প্রায় ৮৫% তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতারা লাইসেন্স গ্রহণের ফলে সুবিধা ভোগ করছে। প্রায় ১০.৯% ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে কোন আইনী সমস্যা নেই; প্রায় ২৫% মাস্তানদের চাঁদা দিতে হয় না; প্রায় ৩.১% বিক্রেতারা লাইসেন্স ব্যবহার করে লোন নেয়; প্রায় ৫৭.৯% বিক্রেতা, তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে নিরাপত্তা আছে বলে দাবী করেন। তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে লাইসেন্স এর ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রায় ১০.৫% তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতারা বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার কমেছে; প্রায় ৫.৩% বলেন, পৌরসভার আয় বেড়েছে; প্রায় ৫২.৬% বলেন, যত্রতত্র তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় কমেছে; প্রায় ২১.১% বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সম্পর্কে মানুষ সচেতন হয়েছে। তবে, তামকাজাত দ্রব্য বিক্রয় লাইসেন্স এর নির্দেশিকা সম্পর্কে বিক্রয়কারীরা প্রায় ৩১.১% বলেন, পৌরসভায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও লাইসেন্স এর নির্দেশিকা মানা বাধ্যতামূলক নয়; প্রায় ৪৮.৯% বলেন, একটা আইন/ গেজেটের মাধ্যমে নির্দেশিকা প্রকাশ করা দরকার; প্রায় ১৩.৩% বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও লাইসেন্স সম্পর্কে পৌরসভার আরো শক্ত হতে হবে; প্রায় ৬.৭ % বলেন, আরো জনসচেতনতা ও প্রচারণা প্রয়োজন; ৪.৪% বলেন, সরকারকে তামাক নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশিকা বাস্তবায়ণে আরো কঠোর হতে হবে।

জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশের অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে অংশগ্রহণ করেন- জনাব শরফ উদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সাভার পৌরসভা; জনাব সাইদুর রহমান, লাইসেন্স অফিসার, মানিকগঞ্জ পৌরসভা; জনাব আমিনুল ইসলাম বকুল, নির্বাহী পরিচালক, এইড ফাউন্ডেশন; জনাব সুজিত দাস, সিইও, ইনটার্ন বিডি; জনাব আতাউর রহমান মাসুদ, প্রোগ্রাম অফিসার, সিটিএফকে; জনাব মোঃ খলিল্লুল্লা, জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি (নাটাব) ঢাকা; জনাব হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, প্রগ্রাম ম্যানেজার, ব্ররু অফ ইকোনোমিকস, ঢাকা ইউনিভারসিটি; জনাব মোহাম্মদ হাসনাইন, প্রোগ্রাম কর্ডিনেটর, সুপ্র; জনাব শুভ কর্মকার, নেটওয়ার্ক অফিসার, ডব্লিউ বিবি ট্রাস্ট; জনাব মোঃ মহিউদ্দিন, প্রকল্প কর্মকর্তা, টিসিআরসি; জনাব রাশেদউজ্জামান, উবিনিগ সহ এইড ফাউন্ডেশনের অন্যান্য কর্মকর্তা।